আজকে আমরা জানবো ডিজিটাল মার্কেটিং কি ?
“ডিজিটাল” এবং “মার্কেটিং”, দুটো শব্দের অর্থ ভিন্ন ।
এক্ষেত্রে, Digital মানে হলো এমন একটি টেকনোলজি যেটা কম্পিউটার বা যেকোনো electronic device এর মাধ্যমে ইলেকট্রনিক (electronic) টেকনোলজি কে বুঝায় যেটা বিশেষ ভাবে ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক এর সাথে জড়িত।
এবং, মার্কেটিং মানে হলো, যেকোনো ব্যাবসা (business), প্রোডাক্ট (product), সার্ভিস বা ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য গ্রাহকের কাছে বিভিন্ন উপায় বা মাধ্যমের ব্যবহার করে প্রচার কর
প্রচারের উদ্দেশ এটাই, যাতে আপনার প্রচার করা পণ্য লোকেরা কিনুক বা আপনার ব্যাবসা এর ব্যাপারে লোকেরা জানুক।
তাহলে, ডিজিটাল মার্কেটিং বলতে কি বুঝায় ? এর অর্থ কি ?
ডিজিটাল শব্দের অর্থ ইন্টারনেটের সাথে জড়িত এবং মার্কেটিং শব্দের অর্থ হলো, যেকোনো product বা service গ্রাহকের কাছে প্রচার করা বা লোকেদের তার বিষয়ে জানানো।
এবং তাই, Digital marketing এর অর্থ অনেক সোজা।
ডিজিটাল মার্কেটিং সেই সব ধরণের মার্কেটিং বা প্রচারের প্রচেষ্টা বা মাধ্যমকে বোঝায় যেগুলি বিশেষভাবে একটি electronic device বা ইন্টারনেট ব্যবহার করে সম্ভব।
নিজেদের উদ্দেশ্য সধনের উপায় হিসেবে অনেক কোম্পানি বা ব্যবসা এই ডিজিটাল মার্কেটিং এর অনেক চ্যানেল ব্যবহার করছেন। ডিজিটাল মার্কেটিং এর বেশ কিছু ভাগ আছে । এই ভাগ গুলির মধ্যে বিশেষ ভাবে –
-Search Engine Optimization (SEO)
-Social Media Marketing (SMM)
-Email Marketing
-অনলাইন বিজ্ঞাপন (ppc) এবং নিজের একটি website অন্যতম । এই মাধ্যম বা উপায় গুলির ব্যবহার করে আজ, যেকোনো কোম্পানি নিজের ব্যবসা (business) বা পণ্য (product) অনেক কম খরচে দেশ বিদেশের যেকোনো জায়গায় যেকোনো শহরে বা গ্রামে নিজের পণ্যর প্রচার বা মার্কেটিং করছেন এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে লক্ষবস্ত গ্রাহক পেয়ে যাচ্ছেন।
এটাই হলো “ডিজিটাল মার্কেটিং” এবং বর্তমানে মার্কেটিং এর অনেক শক্তিশালী উপায় বা মাধ্যম।
আজকাল ইন্টারনেট ব্যবহার করা লোকেদের সংখ্যা অনেক অনেক বেড়ে গেছে এবং আসছে সময়ে এর ব্যবহার আরো বাড়বে।
গ্রাহক কোন পন্য কিনতে হলে আজকাল সরসরি দোকানে যাওয়ার আগে অনলাইনে দেখে নেয় । এছাড়াও গ্রাহক সোশ্যাল মিডিয়া সাইট গুলিতে নিজের সময় দেন অনেক বেশি । সাধারন মানুষ ইন্টারনেটে একটানা (continuous) ব্যবহার না করে থাকতেই পারেনা। সুতরাং দেখতে পাচ্ছি অনলাইনে ডিজিটাল প্লাটফর্মে ব্যবসার প্রসার ঘটানোর সুযোগ অনেক বেশি গতানুগতিক পদ্ধতির চাইতে ।
এমনিতে, বিভিন্ন কোম্পানি বা business নিজের পণ্য বা সার্ভিস প্রচার বা মার্কেটিং করার জন্য ইন্টারনেট থেকে আর কি ভালো সুযোগ বা জায়গা পাবেন, যেখানে সব ধরণের চাহিদা বা ইচ্ছে রাখা লক্ষবস্ত গ্রাহকের কোনো সীমাবদ্ধতা নেই।
এবং এগুলি সব সম্ভব ইন্টারনেটের দ্বারা করা এই মার্কেটিং প্রক্রিয়ার দ্বারা যাকে আমরা digital marketing বলি।
সোজা ভাবে বললে, ডিজিটাল মার্কেটিং এর বিভিন্ন মাধ্যমের ব্যবহার করে আপনি নিজের ব্যবসার সাথে জড়িত কাস্টমার বা লক্ষবস্তু গ্রাহকের সাথে সংযোগ (connect) হতে পারবেন সেখান থেকে যেখানে তারা অনলাইন ইন্টারনেটে নিজেদের বেশি সময় খরচ করেন।
Digital Marketing এর প্রধান যে সব উপাদান –
১। সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং – আপনারা হয়তো অনেক সময় লক্ষ করেছেন, আমরা যখন Google search এর মাধ্যমে কিছু সার্চ করি, তখন প্রথম ৩ থেকে ৫ টি সমাধান বা সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্টের মধ্যে আপনি বিজ্ঞাপন দেখবেন। বিজ্ঞাপন গুলি সাধারণ ভাবেই দেয়া থাকে এবং তার আগে [Ad] বলে লেখা থাকে। বিভিন্ন কোম্পানি বা business owners Google Adword দ্বারা গুগল সার্চ ইঞ্জিন বা অন্য অনলাইন সার্চ ইঞ্জিন গুলিতে এভাবে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে ব্লগ বা ওয়েবসাইটের দ্বারা নিজের product বা service এর মার্কেটিং, প্রচার বা গ্রাহক খোঁজার চেষ্টা করাকেই search engine marketing বলা হয়।
সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং (SEM) হল ইন্টারনেট মার্কেটিংয়ের একটি রূপ যা সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে ওয়েবসাইটের দৃশ্যমানতা বাড়ানোর জন্য ব্যবহৃত হয়। এর মধ্যে পেইড সার্চ বিজ্ঞাপন, পে-পার-ক্লিক (PPC), এবং সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন (SEO) অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। SEM-এর মাধ্যমে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের টার্গেট অডিয়েন্সের সামনে তাদের পণ্য বা সেবাগুলো প্রাসঙ্গিক সার্চ ফলাফলের মধ্যে প্রদর্শন করতে পারে।
উদাহরণস্বরূপ, ধরুন আপনি একটি অনলাইন বইয়ের দোকান পরিচালনা করছেন এবং আপনি আপনার বিক্রয় বাড়াতে চান। এজন্য আপনি গুগল অ্যাডওয়ার্ডস-এর মাধ্যমে একটি পেইড সার্চ ক্যাম্পেইন শুরু করতে পারেন। আপনি যদি “বেস্ট সেলার বই” কিওয়ার্ডের জন্য বিড করেন, তাহলে যখন কেউ গুগলে “বেস্ট সেলার বই” খোঁজ করবে, আপনার বিজ্ঞাপনটি সার্চ ফলাফলের শীর্ষে প্রদর্শিত হবে। এতে করে আপনার ওয়েবসাইটে বেশি ট্রাফিক আসবে এবং বিক্রয় বৃদ্ধির সম্ভাবনা বাড়বে।
SEM কৌশলগুলি সঠিকভাবে প্রয়োগ করা হলে এটি দ্রুত ফলাফল দিতে পারে এবং ব্যবসার জন্য অত্যন্ত কার্যকর হতে পারে। এই কারণে, সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের একটি প্রধান অংশ হয়ে উঠেছে।
২। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটি – সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং হলো এমন একটি মার্কেটিং এর উপায় যেখানে বিভিন্ন অনলাইন সোশ্যাল মিডিয়া ওয়েবসাইট যে “Facebook“, “Twitter” বা “Instagram” ইত্যাদি ব্যবহার করে brand, product বা service প্রোমোট করা হয়। আজ সব ধরণের গ্রাহক বা ভোক্তা (consumer) সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। কারণ, স্কুলে পড়া স্টুডেন্ট থেকে বয়স্ক লোক অব্দি সবাই social media websites ব্যবহার করেন। এবং, তাই বিভিন কোম্পানিরা social media marketing এর দ্বারা, তাদের পণ্যর (product) শ্রেনীর (category) হিসেবে অনেক সহজে লক্ষবস্ত ভোক্তা বা গ্রাহক পেয়ে যান।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং (এসএমএম) হল একটি ডিজিটাল মার্কেটিং কৌশল যা সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলির মাধ্যমে পণ্য, পরিষেবা, বা ব্র্যান্ড প্রচারের জন্য ব্যবহৃত হয়। এই কৌশলটি বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম যেমন ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার, লিংকডইন, এবং ইউটিউব ইত্যাদির মাধ্যমে লক্ষ্যমাত্রা দর্শকদের কাছে পৌঁছায় এবং তাদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে। এসএমএম-এর মূল লক্ষ্য হল ব্র্যান্ড সচেতনতা বৃদ্ধি, ওয়েবসাইটের ট্রাফিক বাড়ানো, এবং বিক্রয় বৃদ্ধি করা।
উদাহরণ হিসেবে, একটি কসমেটিক্স ব্র্যান্ডের কথা ভাবুন যা তার নতুন লিপস্টিক কালেকশন প্রচারের জন্য ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করছে। প্রথমে, তারা প্রোডাক্ট ফটোগ্রাফি এবং ভিডিওগুলি পোস্ট করে যা পণ্যগুলির বৈশিষ্ট্য এবং উপকারিতা দেখায়। এরপর, তারা ইনফ্লুয়েন্সারদের সাথে অংশীদারিত্ব করে যারা তাদের ফলোয়ারদের কাছে পণ্যগুলি পরামর্শ দেয়। এছাড়াও, তারা একটি কন্টেস্ট বা গিভঅ্যাওয়ের আয়োজন করতে পারে যেখানে ব্যবহারকারীরা তাদের ফলোয়ার হতে এবং পোস্টগুলি শেয়ার করতে উত্সাহিত হয়। এই ধরনের প্রচারণা সরাসরি প্রোডাক্টের বিক্রয় বাড়ায় এবং ব্র্যান্ডের প্রতি বিশ্বস্ততা তৈরি করে।
এসএমএম কেবলমাত্র পণ্য প্রচারেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি গ্রাহকদের সাথে সরাসরি সংযোগ স্থাপনের একটি উপায়। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলির মাধ্যমে গ্রাহক পর্যালোচনা, প্রশ্ন এবং প্রতিক্রিয়ার দ্রুত উত্তর প্রদান করা যায়, যা গ্রাহকদের সন্তুষ্টি এবং বিশ্বস্ততা বৃদ্ধি করে। অতএব, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বর্তমান যুগে ব্যবসায়িক সাফল্যের জন্য একটি অপরিহার্য কৌশল।
৩। Email মার্কেটিং – Email marketing ডিজিটাল মার্কেটিং এর এমন একটি ভাগ বা মাধ্যম, যেখানে কোনো পণ্য, ব্র্যান্ড বা সার্ভিস এর মার্কেটিং বা প্রচার ইমেইল এর মাধ্যমে করা হয়। সাধারনে আমরা যেভাবে ইমেইল করি সেটা ইমেইল মার্কেটিং নয়। এখানে, যেই service বা product বা brand আপনি প্রচার করতে চাচ্ছেন সেটার বিষয়ে আপনার ভালো করে message লিখতে হয়। তার পর, সেই message ইমেইল এর মাধ্যমে হাজার হাজার লোকেদের ইমেইল আইডিতে পাঠিয়ে দিতে হয় । এতে আপনি যেকোনো জিনিস বা পণ্যর প্রচার বা প্রমোশন হাজার হাজার লোকেদের কাছে এক সাথেই একটি ইমেইল এর মাধ্যমেই করতে পারবেন। আজ বিভিন্ন online marketer রা ইমেইল মার্কেটিং এর প্রচুর ব্যবহার করছেন এবং তাদের service বা product এর প্রমোশন করছেন।
ইমেল মার্কেটিং হল একটি ডিজিটাল বিপণন কৌশল যা ইমেলের মাধ্যমে গ্রাহকদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন ও ব্যবসায়িক প্রচারণা করা হয়। এটি বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়, যেমন নতুন পণ্য বা সেবা সম্পর্কে জানানো, বিশেষ অফার বা ছাড়ের বিজ্ঞাপন, এবং গ্রাহকদের নিয়মিত আপডেট প্রদান। ইমেল মার্কেটিং-এর মাধ্যমে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের লক্ষ্য গ্রাহকগোষ্ঠীর সাথে সরাসরি এবং ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করতে পারে, যা বিক্রয় বৃদ্ধিতে সহায়ক হতে পারে।
উদাহরণস্বরূপ, একটি অনলাইন পোশাক বিক্রেতা তাদের নিবন্ধিত গ্রাহকদের কাছে নতুন সংগ্রহের ইমেল পাঠাতে পারে। ইমেলটিতে বিভিন্ন পোশাকের ছবি, বিবরণ, এবং কেনাকাটার জন্য বিশেষ ছাড়ের কুপন থাকতে পারে। গ্রাহক ইমেলটি পাওয়ার পর তাদের আগ্রহী পণ্যগুলি সহজেই দেখতে পারে এবং প্রয়োজনে কিনতে পারে। এভাবে, ইমেল মার্কেটিং ব্যবহার করে বিক্রেতা তাদের পণ্যগুলি গ্রাহকদের সামনে উপস্থাপন করতে এবং বিক্রয় বাড়াতে পারে।
এই প্রক্রিয়াটি কেবলমাত্র বিক্রয় বৃদ্ধিতেই নয়, বরং ব্র্যান্ডের সুনাম বৃদ্ধিতেও সহায়ক। ইমেল মার্কেটিং-এর মাধ্যমে নিয়মিতভাবে গ্রাহকদের সাথে যোগাযোগ রাখা যায়, যা তাদের ব্র্যান্ডের প্রতি বিশ্বস্ততা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। সঠিকভাবে পরিচালিত ইমেল মার্কেটিং কৌশল একটি ব্যবসার জন্য অত্যন্ত কার্যকর হতে পারে।
৪। Video দ্বারা marketing (Youtube Marketing) – ইউটিউবের চ্যানেল বানিয় তাতে নিজের business বা brand এর ব্যাপারে ভিডিও বানিয়ে আজ অনেক কোম্পানি বা business owners রা ভিডিওর মাধ্যমে নিজের ব্যবসার প্রচার বা প্রমোশন করছেন। আপনি YouTube এ গিয়ে যেকোনো কোম্পানির বিষয়ে সার্চ কোরে দেখুন, আপনি তাদের official product বা service এর অনেক ভিডিও পেয়ে যাবেন। ইউটিউব, গুগল সার্চ এর পর দ্বিতীয় সবথেকে বড়ো সার্চ ইঞ্জিন, যেখানে প্রতি দিন লক্ষ লক্ষ লোকেরা ভিডিও দেখতে আসেন। তাই, যেকোনো জিনিসের বা পণ্যর প্রমোশন (promotion) করার জন্য ভিডিও বানিয়ে YouTube এ ছাড়াটা অনেক লাভজনক হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।
ইউটিউব মার্কেটিং বলতে ইউটিউব প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে বিভিন্ন পণ্য বা সেবা প্রচার এবং বিক্রয়কে বোঝায়। এটি একটি ডিজিটাল মার্কেটিং কৌশল যা ভিডিও কনটেন্টের মাধ্যমে দর্শকদের কাছে পৌঁছানোর জন্য ব্যবহৃত হয়। ইউটিউব মার্কেটিং এর মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা তাদের ব্র্যান্ডের সচেতনতা বৃদ্ধি করতে পারে, পণ্য বা সেবার বিবরণ প্রদান করতে পারে এবং সরাসরি দর্শকদের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, একটি কোম্পানি যদি নতুন একটি মোবাইল ফোন বাজারজাত করতে চায়, তারা ইউটিউবে একটি বিশদ রিভিউ ভিডিও তৈরি করতে পারে। এই ভিডিওটিতে মোবাইল ফোনটির বৈশিষ্ট্য, সুবিধা এবং ব্যবহার পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। সেই ভিডিওটি ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করার পর, কোম্পানি সেটিকে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম এবং অন্যান্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে শেয়ার করতে পারে, যার ফলে আরও বেশিসংখ্যক দর্শক সেই ভিডিওটি দেখতে পাবে এবং মোবাইল ফোনটি সম্পর্কে জানতে পারবে। ইউটিউব মার্কেটিং এর মাধ্যমে কোম্পানি শুধু পণ্য প্রচার করেই সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং গ্রাহকদের প্রতিক্রিয়া পেয়ে তাদের পণ্য বা সেবার মান উন্নয়নেও সহযোগিতা পায়। তাই ইউটিউব মার্কেটিং আজকের ডিজিটাল যুগে একটি অপরিহার্য এবং কার্যকরী মার্কেটিং কৌশল।
৫। Affiliate marketing – এফিলিয়েট মার্কেটিং ডিজিটাল মার্কেটিং এর এমন একটি মাধ্যম, যেখানে বিভিন্ন কোম্পানিরা কমিশন (commission) এর লোভ দেখিয়ে বিভিন্ন অনলাইন ওয়েবসাইট বা ব্লগে তাদের brand বা product এর মার্কেটিং বা প্রমোশন করেন। আপনার যদি একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইট আছে, তাএফিলিয়েট মার্কেটিং কি ? এর দ্বারা টাকা আ কিভাবে করতে পারবেন, এ বেপারে অবশই জেনেনিন।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এমন একটি বিপণন কৌশল যেখানে একটি কোম্পানি তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে তাদের পণ্য বা পরিষেবা প্রচার করে এবং প্রতিটি সফল বিক্রয় বা কার্যকলাপের জন্য তৃতীয় পক্ষকে কমিশন প্রদান করে। এই প্রক্রিয়াটিতে তিনটি প্রধান অংশগ্রহণকারী থাকে: বিক্রেতা বা পণ্য প্রদানকারী, অ্যাফিলিয়েট বা প্রচারকারী, এবং গ্রাহক বা ক্রেতা। অ্যাফিলিয়েটরা তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইট, ব্লগ, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম, বা অন্যান্য ডিজিটাল মাধ্যমে প্রোমোশনাল লিংক শেয়ার করে এবং যখন একজন গ্রাহক সেই লিংকের মাধ্যমে পণ্য ক্রয় করে, তখন অ্যাফিলিয়েট কমিশন অর্জন করে।
উদাহরণস্বরূপ, ধরুন আপনি একটি জনপ্রিয় ব্লগার, এবং আপনার ব্লগে বিভিন্ন প্রোডাক্ট রিভিউ পোস্ট করেন। আপনি একটি ইলেকট্রনিক্স কোম্পানির সাথে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং চুক্তি করেছেন। আপনি আপনার ব্লগে একটি নতুন স্মার্টফোনের রিভিউ লিখলেন এবং সেই স্মার্টফোনের কেনার জন্য একটি অ্যাফিলিয়েট লিংক শেয়ার করলেন। যদি আপনার ব্লগের পাঠক সেই লিংকের মাধ্যমে স্মার্টফোনটি ক্রয় করে, তাহলে কোম্পানি আপনাকে একটি নির্দিষ্ট শতাংশ কমিশন প্রদান করবে। এভাবেই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কাজ করে, যেখানে উভয় পক্ষই লাভবান হয়— কোম্পানি তাদের পণ্য বিক্রি করতে পারে এবং অ্যাফিলিয়েট কমিশন অর্জন করে।
৬। Blog বা website দ্বারা মার্কেটিং – আজ আপনি সব ধরণের কোম্পানির একটি ব্লগ ও ওয়েবসাই অবশই পাবেন। এর কারণ হলো, আজ লোকেরা সব ধরণের ছোট বড় প্রশ্নের উত্তর ইন্টারনেটে সার্চ করেন। এখন, আপনি যদি নিজের কোম্পানি, business বা product এর সাথে জড়িত প্রশ্নোর উত্তর বা সমাধান একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইট বানিয়ে আর্টিকেল এর মাধ্যমে লোকেদের দেন, তাহলে সেই blog বা ওয়েবসাইটে আশা ভিসিটর বা ট্রাফিক আপনার brand বা product প্রমোশন করার অনেক ভালো মাধ্যম হিসেবে প্রমানিত হতে পারে। নিজের brand বা business এর একটি ওয়েবসাইট বা ব্লগ আজ সবাই তৈরি করছেন এবং এ ডিজিটাল মার্কেটিং এর অনেক জরুরি সাধন হিসেবে প্রমাণিত হচ্ছে। নিজের brand বা business এর একটি ওয়েবসাইট বা ব্লগ আজ সবাই তৈরি করছেন এবং এ ডিজিটাল মার্কেটিং এর অনেক জরুরি সাধন হিসেবে প্রমাণিত হচ্ছে।
ব্লগ / ওয়েবসাইট মার্কেটিং হল একটি ডিজিটাল মার্কেটিং কৌশল যেখানে ব্লগ বা ওয়েবসাইট ব্যবহার করে ব্র্যান্ডের প্রমোশন করা হয়। এই কৌশলটি ব্যবসা, পণ্য বা সেবার জন্য অনলাইন উপস্থিতি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। ব্লগ বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে মূলত কাস্টমারদের সাথে সংযোগ স্থাপন, তাদের সমস্যা সমাধান এবং ব্র্যান্ডের প্রতি তাদের বিশ্বাস বাড়ানোর চেষ্টা করা হয়। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কোম্পানির ওয়েবসাইটে ট্রাফিক বাড়ানো হয়, যা পরবর্তী সময়ে বিক্রয় বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
উদাহরণস্বরূপ, ধরুন একটি কসমেটিক্স কোম্পানি আছে যেটি অনলাইন প্রমোশনের জন্য একটি ব্লগ চালায়। ব্লগটি বিভিন্ন বিউটি টিপস, স্কিন কেয়ার রুটিন, এবং তাদের পণ্যের ব্যবহারের উপায় নিয়ে পোস্ট করে। এই ব্লগের মাধ্যমে পাঠকরা পণ্যের সম্পর্কে জানেন এবং কিভাবে তা ব্যবহার করতে হবে সেটাও শিখে নেন। এর ফলে, পাঠকরা কোম্পানির প্রতি বিশ্বাসী হন এবং পণ্য কেনার ক্ষেত্রে তাদের আগ্রহ বাড়ে। একই সময়ে, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও) কৌশলের মাধ্যমে ব্লগ পোস্টগুলি সার্চ রেজাল্টে উচ্চ স্থানে থাকে, যা ওয়েবসাইটে আরও বেশি ট্রাফিক নিয়ে আসে। এইভাবে, ব্লগ / ওয়েবসাইট মার্কেটিং কোম্পানির ব্র্যান্ড ভ্যালু এবং বিক্রয় বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
তাহলে আশাকরি, ডিজিটাল মার্কেটিং এর বিভিন্ন প্রকারভেদ এর ব্যাপারে আপনারা ভালো করে জেনেগেছেন।
এছাড়াও, আরো অনেক উপায় বা মাধ্যম আছে যেগুলি ডিজিটাল মার্কেটিং বা ইন্টারনেট মার্কেটিং এ ব্যবহার করা হয়।
কিন্তু, আজ মূলভাবে আমি যে প্রকার গুলির কথা বললাম, সেগুলি প্রচুর পরিমানে ব্যবহার হচ্ছে।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর লাভ কি কি?
ডিজিটাল মার্কেটিং এর সুবিধাসমূহ
ডিজিটাল মার্কেটিং একটি অত্যন্ত কার্যকর পদ্ধতি, যা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জন্য উন্নয়নের পথ সুগম করে। এর প্রধান সুবিধাসমূহ নিম্নরূপ:
- বিস্ত্রিত ভাবে পৌঁছানো: ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী লক্ষাধিক মানুষের কাছে সহজেই পৌঁছানো যায়।
- খরচ সাশ্রয়ী: প্রচলিত বিজ্ঞাপনের তুলনায় ডিজিটাল মার্কেটিং অনেক কম খরচে করা যায়।
- *লক্ষ্যভিত্তিক বিজ্ঞাপন*: নির্দিষ্ট দর্শকগোষ্ঠীর জন্য লক্ষ্যভিত্তিক বিজ্ঞাপন দেওয়া সম্ভব।
- *ফলাফল মাপা*: বিভিন্ন টুল ব্যবহার করে বিজ্ঞাপনের কার্যকারিতা সহজেই মাপা যায়।
- *সামাজিক মিডিয়ার ব্যবহার*: ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদি মাধ্যমে বিপণন সহজ হয়।
- ব্র্যান্ড সচেতনতা বৃদ্ধি: ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে ব্র্যান্ডের পরিচিতি বৃদ্ধি করা সম্ভব।
- অনলাইন রিভিউ*: গ্রাহকের মতামত ও পর্যালোচনা সহজেই সংগ্রহ ও ব্যবহৃত করা যায়।
- *গ্রাহক যোগাযোগ*: গ্রাহকদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করা যায়।
- *উচ্চ রিটার্ন অন ইনভেস্টমেন্ট (ROI)*: ডিজিটাল মার্কেটিং এ বিনিয়োগের তুলনায় আয় অনেক বেশি হয়।
- *তথ্য বিশ্লেষণ*: বিভিন্ন ডেটা বিশ্লেষণ করে বিপণন কৌশল উন্নত করা যায়।
- *বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা*: বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগীদের সাথে প্রতিযোগিতা করার সুযোগ।
- *বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম*: বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম যেমন ইমেইল, সোশ্যাল মিডিয়া, এসইও ইত্যাদি ব্যবহার করা যায়।
- *গুগল অ্যাডস*: গুগল অ্যাডস এর মাধ্যমে সঠিক দর্শককে পৌঁছানো যায়।
- *ইমেইল মার্কেটিং*: ইমেইলের মাধ্যমে সরাসরি গ্রাহকদের কাছে বিপণনের বার্তা পৌঁছানো যায়।
- *কন্টেন্ট মার্কেটিং*: মানসম্মত কন্টেন্ট তৈরি করে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করা সম্ভব।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর এসব সুবিধা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জন্য বিপণন কৌশলকে আরও সহজ এবং কার্যকর করে তুলেছে। এটি বর্তমান সময়ের একটি অপরিহার্য টুল হিসেবে বিবেচিত।
কিভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখবেন ?
ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে চাইলে প্রথমেই আপনাকে এর মূল বিষয়গুলি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা নিতে হবে। ডিজিটাল মার্কেটিং এর বিভিন্ন দিক রয়েছে, যেমন সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO), পে পার ক্লিক (PPC) বিজ্ঞাপন, কনটেন্ট মার্কেটিং, ইমেইল মার্কেটিং, এবং সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং। প্রতিটি দিকের জন্য আলাদা আলাদা কৌশল এবং টুলস ব্যবহার করতে হয়। প্রথমে আপনি একটি মৌলিক কোর্স করে নিতে পারেন যা ডিজিটাল মার্কেটিং এর বিভিন্ন দিকগুলি সম্পর্কে সাধারণ ধারণা দেয়। এছাড়াও, বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম যেমন কুরসেরা, উডাসিটি, এবং ইউডেমিতে প্রচুর ভালো কোর্স পাওয়া যায়। এই কোর্সগুলি থেকে আপনি প্রাথমিক জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন এবং এরপরে বিশেষজ্ঞ হতে পারবেন নির্দিষ্ট কোন একটি ক্ষেত্রে।
দ্বিতীয়ত, আপনার প্রয়োজন নিয়মিত অনুশীলন এবং অভিজ্ঞতা অর্জন। কেবল তাত্ত্বিক জ্ঞান অর্জন করলে হবে না, আপনাকে সেগুলোর বাস্তব প্রয়োগ করতে হবে। আপনি নিজে থেকেই একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন এবং সেখানে আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং কৌশলগুলি প্রয়োগ করতে পারেন। এছাড়াও, আপনি বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্মে সক্রিয় থাকতে পারেন এবং সেখানে বিপণন কৌশলগুলি প্রয়োগ করতে পারেন। ফ্রি টুলস যেমন গুগল অ্যানালিটিক্স, গুগল অ্যাডস, এবং ফেসবুক অ্যাড ম্যানেজার ব্যবহার করে আপনি আপনার প্রচারণার কার্যকারিতা পরিমাপ করতে পারেন। এসব টুলস ব্যবহার করে আপনি যে তথ্য পাবেন তা বিশ্লেষণ করে আপনার কৌশলগুলিকে উন্নত করতে পারবেন।
অবশেষে, ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে হলে আপনাকে সবসময় আপডেট থাকতে হবে। ডিজিটাল মার্কেটিং এর জগতে পরিবর্তন খুব দ্রুত হয়, এবং নতুন নতুন টুলস ও কৌশল বাজারে আসে। আপনাকে নিয়মিত ব্লগ, ওয়েবিনার, এবং পডকাস্ট অনুসরণ করতে হবে যা ডিজিটাল মার্কেটিং এর সর্বশেষ প্রবণতা এবং পরিবর্তনগুলি সম্পর্কে জানায়। এছাড়াও, বিভিন্ন ডিজিটাল মার্কেটিং কমিউনিটিতে যোগদান করতে পারেন যেখানে আপনি অন্যদের সাথে মত বিনিময় করতে পারেন এবং নতুন কিছু শিখতে পারেন। ডিজিটাল মার্কেটিং এর জন্য নির্দিষ্ট সার্টিফিকেশন কোর্স করতে পারেন যা আপনার জ্ঞান ও দক্ষতাকে প্রমাণিত করে। সর্বোপরি, নিয়মিত চর্চা, অধ্যবসায় এবং সঠিক দিকনির্দেশনা আপনাকে একজন সফল ডিজিটাল মার্কেটার হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।
কারা শিখতে পারেন ডিজিটাল মার্কেটিং ?
ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে কারা পারেন
ডিজিটাল মার্কেটিং একটি বিস্তৃত ক্ষেত্র যা বিভিন্ন ধরণের মানুষের জন্য উপযোগী হতে পারে। ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে নিম্নলিখিত ব্যক্তিরা আগ্রহী হতে পারেন:
1. *ব্যবসায়ী*: যারা তাদের ব্যবসা অনলাইনে প্রসারিত করতে চান।
2. *উদ্যোক্তা*: যারা নতুন ব্যবসা শুরু করতে যাচ্ছেন এবং কম খরচে বিপণন কৌশল শিখতে চান।
3. *ছাত্রছাত্রী*: যারা ক্যারিয়ার হিসেবে ডিজিটাল মার্কেটিং বেছে নিতে চান।
4. *ফ্রিল্যান্সার*: যারা বিভিন্ন ক্লায়েন্টের জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং সেবা প্রদান করতে চান।
5. *বিপণন পেশাজীবী*: যারা তাদের দক্ষতা উন্নত করতে চান।
6. *ব্লগার*: যারা তাদের ব্লগের দর্শকসংখ্যা বাড়াতে চান।
7. *ই-কমার্স ব্যবসায়ী*: যারা অনলাইনে পণ্য বিক্রি করেন।
8. *কনটেন্ট ক্রিয়েটর*: যারা কনটেন্ট তৈরি করেন এবং সেগুলো প্রচার করতে চান।
9. *সংবাদকর্মী*: যারা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে তাদের সংবাদ পৌঁছাতে চান।
10. *সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার*: যারা বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সামাজিক মিডিয়া অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করেন।
11. *ফ্রেশ গ্র্যাজুয়েট*: যারা ক্যারিয়ারের শুরুতে নতুন দক্ষতা অর্জন করতে চান।
12. *কনসালটেন্ট*: যারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জন্য বিপণন পরামর্শ দেন।
13. *অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার*: যারা বিভিন্ন পণ্য প্রচারের মাধ্যমে কমিশন উপার্জন করেন।
14. *অ্যাপ ডেভেলপার*: যারা তাদের অ্যাপের প্রচার ও ডাউনলোড বাড়াতে চান।
15. *নন-প্রফিট অর্গানাইজেশন কর্মী*: যারা সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করতে চান।
ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে ইচ্ছুক যে কেউ এ ক্ষেত্র থেকে উপকৃত হতে পারেন। বর্তমান সময়ে ডিজিটাল মার্কেটিং একটি গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা হয়ে উঠেছে যা বিভিন্ন পেশার মানুষের জন্য অপরিহার্য।